বাংলা হান্ট ডেস্ক: গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ সংবাদমাধ্যম (Media)। কিন্তু, বিশ্বের (World) নানা দেশে সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। এমনকি, সাংবাদিকদের জেলেও ভরা হচ্ছে। একইসঙ্গে সাংবাদিক হত্যার ঘটনাও ঘটছে। প্রতিবছর ৩ মে বিশ্বজুড়ে পালিত হয় “ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রি়ডম ডে” (World Press Freedom Day)। তা সত্ত্বেও কাজ হচ্ছে না। সাংবাদিকরা আক্রান্ত হচ্ছেন বিশ্বজুড়ে। “কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস” এই সংক্রান্ত যে রিপোর্ট পেশ করেছে তাতে বিশ্বের যে দেশগুলিতে সাংবাদিকরা লাগাতার নিপীড়নের শিকার তার তালিকা পেশ করা হয়েছে।
“কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস”-এর পেশ করা তথ্যানুসারে, সাংবাদিকদের কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে তুর্কমেনিস্তান, বাংলাদেশ, চিন, হাইতি, রাশিয়া, ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক এবং গাজা, মায়ানমার, বেলারুশ, ভিয়েতনাম, ইরান, তুরস্ক, আফগানিস্তান এবং সৌদি আরবে। এছাড়া যে দেশগুলিতে সাংবাদিকরা আক্রান্ত হচ্ছেন সেই দেশগুলির তালিকায় রয়েছে ইরাক, কিউবা, জিম্বাবোয়ে। ভারতেও এনডিএ জমানায় সাংবাদিক নিগ্রহ ও সাংবাদিকদের একাংশকে সংশোধনাগারে ভরা হয়েছে।
“কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্ট”-এর তরফে জানানো হয়েছে যে, সারা পৃথিবীতে বর্তমানে ৩২০ জন জেলে রয়েছেন। পাশাপাশি, ভারতের সংশোধনাগারে ৭ জন সাংবাদিক বন্দি রয়েছেন। সূত্রের খবর, ভারতে সাংবাদিকদের ইউএপিএ আইনে ভরা হচ্ছে সংশোধনাগারে। ২০১৪ সালে এনডিএ সরকার ক্ষমতায় আসার পর স্বাধীনভাবে সাংবাদিকতা করতে গিয়ে বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে বন্দিজীবন কাটাতে হচ্ছে। এমতাবস্থায়, একনজরে দেখে নেওয়া যাক এঁদের তালিকা।
![]()
সূত্রের খবর অনুযায়ী, কাশ্মীর ন্যারেটরের সাংবাদিক আসিফ সুলতান ২০১৮ সালের অগাস্ট মাস থেকে সংশোধনাগারে রয়েছেন। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে বন্দিজীবন কাটাচ্ছেন “দি কাশ্মীর ওয়ালা”-র সাংবাদিক সাজাদ গুল। স্বাধীন সাংবাদিকতা করার দায়ে ২০২০ সালে আটক করা হয়েছে গৌতম নভলাখাকে। ২০২২ সালের জুলাই থেকে সংশোধনাগারে রয়েছেন সাংবাদিক রূপেশ কুমার সিং। নিউজ ক্লিকের সাংবাদিক প্রবীর পুরকায়স্থ ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে সংশোধনাগারে আছেন। এছাড়া স্বাধীন সাংবাদিকতা করার দায়ে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর ও মার্চ থেকে সাংবাদিক মাজিদ হায়দারি এবং ইরফান মেহরাজকে আটক করে সংশোধনাগারে ভরা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চিন-পাকিস্তানের খেলা শেষ! প্রস্তুত ভারতীয় সেনাবাহিনীর STEAG ইউনিট, যুদ্ধক্ষেত্রে হবে ধামাকা
“কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস”-এর তরফে জানানো হয়েছে যে, পৃথিবীর নানা দেশে কর্তৃত্ববাদী সরকার সাংবাদিকদের বন্দি করছে খবরাখবর পরিবেশন করার অভিযোগে। চলতি বছরে সাংবাদিক হত্যা এবং নিগ্রহ কোনদিকে মোড় নেয় সেটাই দেখার। “ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিস্টস”-এর তরফে জানানো হয়েছে, ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে মোট ১২০ জন সাংবাদিক এবং সংবাদকর্মী খুন হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১১ জন ছিলেন মহিলা।
আরও পড়ুন: শুরু হলনা IPL, তার আগেই KKR থেকে বিদায়ের কথা! বড় প্রতিক্রিয়া গৌতম গম্ভীরের
পাশাপাশি, “ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিস্টস”-এর তরফে আরও জানানো হয়েছে, যেসমস্ত সাংবাদিক বা সংবাদকর্মী খুন হয়েছেন তাঁদের মধ্যে ৬৮ শতাংশের মৃত্যুর হয়েছে ইজরায়েল-গাজা আক্রমণের পরবর্তী সময়ে খবরাখবর করতে গিয়ে। সূত্রের খবর, বিশ্বের যে পাঁচ দেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক সাংবাদিক সংশোধনাগারে রয়েছেন, সেই দেশগুলির তালিকায় রয়েছে চিন, মায়ানমার, বেলারুশ, রাশিয়া এবং ভিয়েতনাম। এই পরিস্থিতির পরিবর্তন যে জরুরি একথা সহজ অঙ্কের মতো। সাংবাদিকতার মতো মহান পেশার ওপর রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের ভয়াবহ চেহারা আদতে সভ্যতার সঙ্কট।





Made in India