বাংলা হান্ট ডেস্ক: টিকিট “ক্যানসেলেশন”-এর পর তিনি পাননি পুরো টাকা! এমতাবস্থায়, নিজের প্রাপ্য টাকা ফেরত পেতে রেলের বিরুদ্ধে কার্যত আইনি লড়াই লড়ে তা ছিনিয়ে আনলেন এক যাত্রী। পাশাপাশি, তিনি সাহায্য করলেন আরও প্রায় তিন লক্ষ যাত্রীকে। এমনকি রেল সূত্রে জানা গিয়েছে যে, একই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন ওই বিপুল সংখ্যক যাত্রীদের টাকাও ফেরত দেবে রেল!
ঠিক কি ঘটেছে?
জানা গিয়েছে যে, ২০১৭ সালের ২ জুলাই কোটা থেকে নয়াদিল্লি যাওয়ার জন্য গোল্ডেন টেম্পল মেলের টিকিট কেটেছিলেন রাজস্থানের কোটার বাসিন্দা সুজিত স্বামী। পেশাগতভাবে তিনি হলেন ইঞ্জিনিয়ার। এদিকে, ট্রেনের টিকিট কাটা হয়ে গেলেও কোনো কারণবশত তিনি তাঁর টিকিটটি বাতিল করেন। এদিকে, ঠিক তার আগের দিনই চালু হয়েছিল জিএসটি। এমতাবস্থায়, সুজিত যখন টিকিটটি কেটেছিলেন তখন সেটির দাম পড়েছিল ৭৬৫ টাকা।
এদিকে, তিনি টিকিট বাতিল করতেই ৬৫ টাকার বদলে ১০০ টাকা কেটে নিয়ে বাকি ৬৬৫ টাকা ফেরত দেয় রেল। অর্থাৎ, ৩৫ টাকা বেশি নিয়ে নেয় রেল কর্তৃপক্ষ। এমতাবস্থায়, জিএসটি চালু হওয়ার পরেও কেন তাঁর কাছ থেকে অতিরিক্ত ৩৫ টাকা সার্ভিস ট্যাক্স হিসেবে নেওয়া হল, তা নিয়ে রেলের কাছে প্রশ্ন ছোঁড়েন সুজিত। শুধু তাই নয়, সেই ৩৫ টাকা ফেরত পাওয়ার উদ্দেশ্যে আইনি লড়াইও শুরু করেন তিনি।
পাশাপাশি, তথ্যের অধিকার আইনে (আরটিআই) একটি মামলা করেন সুজিত। যদিও, ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আরটিআই-এর উত্তরে রেল জানিয়ে দেয় যে, ৪৩ নম্বর কমার্শিয়াল সার্কুলার অনুযায়ী, সুজিত জিএসটি চালু হওয়ার আগে তাঁর টিকিটটি কেটেছিলেন। কিন্তু, তিনি বাতিল করেছিলেন জিএসটি চালু হওয়ার পর। আর সেই কারণেই, যেহেতু জিএসটি চালুর আগে টিকিট কাটা হয়েছিল তাই তৎকালীন সার্ভিস ট্যাক্স ফেরতযোগ্য ছিলনা।
যদিও, ২০১৯-এর ১ মে সুজিতের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৩৩ টাকা ফেরত দিয়ে দেয় রেল। কিন্তু, তখনও ২ টাকা কেটে নেওয়া হয়। এমতাবস্থায়, সুজিত ফের সেই ২ টাকা ফেরতের জন্য লড়াই করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত গত সপ্তাহে অবশিষ্ট ২ টাকাও সুজিতকে ফেরত দেয় রেল কর্তৃপক্ষ।
উপকৃত হলেন প্রায় ৩ লক্ষ মানুষ:
মূলত, ৩৫ টাকা আদায়ের জন্য সুজিত তাঁর এই লড়াই শুরু করলেও প্রকৃতপক্ষে তাঁর এই দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে উপকৃত হলেন ২ লক্ষ ৯৮ হাজার মানুষ। এই প্রসঙ্গে আইআরসিটিসি-র এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, ওই ২ লক্ষ ৯৮ হাজার মানুষকে তাঁদের প্রাপ্য টাকা ফেরত দিয়ে দেবে রেল। যদিও, এর জন্য খরচ হবে প্রায় ২ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা।

এদিকে, দীর্ঘ লড়াই শেষে সুজিত জানিয়েছেন, “টাকা ফেরতের জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী, রেলমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর, জিএসটি কাউন্সিল এবং অর্থমন্ত্রীকে একনাগাড়ে টুইট করে গিয়েছি। আর টাকা ফেরতের ক্ষেত্রে এই টুইটগুলিই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে।”





Made in India