বাংলা হান্ট ডেস্ক: দেশে জাপানি বুলেট ট্রেনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষার আবহেই দেশীয় “বুলেট ট্রেন” অর্থাৎ বন্দে ভারত এক্সপ্রেস (Vande Bharat Express) ট্রেন চলতে শুরু করেছে। পাশাপাশি, ইতিমধ্যেই দেশে চতুর্থ বন্দে ভারত এক্সপ্রেস সম্প্রতি নয়াদিল্লি থেকে উনা হিমাচলের মধ্যে চালু হয়েছে। এদিকে, প্রথম বুলেট ট্রেনটি শুরু হবে মুম্বাই ও আহমেদাবাদের মধ্যে। এমতাবস্থায়, বর্তমান প্ৰতিবেদনে আজ আমরা বুলেট ট্রেন এবং বন্দে ভারত এক্সপ্রেস সম্পর্কে কিছু অবাক করা তথ্য আপনাদের সামনে উপস্থাপিত করব।
রেলমন্ত্রকের মতে, বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের গতি বুলেট ট্রেনের গতির চেয়ে কম। তবে এটি ট্রায়াল রানেই মাত্র ৫২ সেকেন্ডে শূন্য থেকে ১০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার গতিবেগে চলতে সক্ষম হয়েছে। অপরদিকে, বুলেট ট্রেন এই গতি অর্জন করতে ৫৪.৬ সেকেন্ড সময় নেয়। অন্যদিকে, বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের সর্বোচ্চ গতি হল ঘন্টায় ১৮০ কিলোমিটার। আবার, বুলেট ট্রেনের গতিবেগ ঘণ্টায় ৩২০ কিলোমিটার বলে দাবি করা হয়েছে।
বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য:
১. মেক ইন ইন্ডিয়া মিশনের অধীনে, বন্দে ভারত ট্রেনটি চেন্নাইতে অবস্থিত ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরিতে ডিজাইন এবং নির্মিত হয়েছে।
২. মান এবং প্যাসেঞ্জার ইনডেক্সে ট্রেনের স্কোর হল ৩.২। যেখানে বিশ্বব্যাপী সেরা স্কোর হল ২.৯।
৩. বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে একটি ৩২ ইঞ্চি এলসিডি টিভি রয়েছে। পাশাপাশি, ট্রেনটিতে পরিষ্কার এয়ার কুলিং সিস্টেম লাগানো হয়েছে। যা ভ্রমণকে আরও আরামদায়ক করে তোলে।
৪. বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের নতুন ডিজাইনে, কোচে শুদ্ধ বাতাসের জন্য ফটো-ক্যাটালিটিক আল্ট্রা ভায়োলেট এয়ার পিউরিফিকেশন সিস্টেম বসানো হয়েছে।
৪. এতে মোট তিন ঘণ্টার ব্যাটারি ব্যাকআপ থাকবে। পাশাপাশি, এটির ওজন ৪৩০ টন থেকে কমিয়ে ২৯০ টন করা হয়েছে।
৫. ট্রেনটিতে একটি সেল্ফ-প্রোপেল্ড ইঞ্জিন রয়েছে। অর্থাৎ এই ট্রেনে আলাদা কোনো ইঞ্জিন সংযুক্ত নেই। অপরদিকে, এক্সিকিউটিভ কোচের আসন ১৮০ ডিগ্রি পর্যন্ত ঘোরানো যেতে পারে।
৬. বন্দে ভারত এক্সপ্রেস যে কোনো আমদানি করা ট্রেনের চেয়ে ৪০ শতাংশ কম খরচে তৈরি করা হয়েছে।
৭. বন্দে ভারত ট্রেনের প্রথম রেক তৈরি করতে ১০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। পাশাপাশি, এটি প্রস্তুত করতে সময় লেগেছে ১৮ মাস।
৮. বন্দে ভারতের ভাড়া সম্পর্কে জানাতে গেলে বলতে হয় যে, দিল্লি থেকে কাটরা পর্যন্ত এসি চেয়ার কারের ভাড়া ১,৬৩০ টাকা এবং এক্সিকিউটিভ চেয়ার কারের ভাড়া প্রায় ৩,০০০ টাকা।
জাপানি বুলেট ট্রেনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য:
১. প্রথমেই জানিয়ে রাখি যে, জাপানের Synkansen E-5 সিরিজের বুলেট ট্রেন ভারতে চলবে। এই বুলেট ট্রেনটি ইস্ট জাপান রেলওয়ে কোম্পানির অন্তর্ভুক্ত।
১. প্রথম বুলেট ট্রেনটি মুম্বাই এবং আহমেদাবাদের মধ্যে হাই স্পিড রেল করিডোরে চালানো হবে।
৩. ভারতে বুলেট ট্রেনের গতি হবে প্রতি ঘন্টায় ৩২০ কিলোমিটার।
৪. বুলেট ট্রেনে একসঙ্গে ৮০০ যাত্রী ভ্রমণ করতে পারবেন। তবে প্রকল্প সফল হওয়ার পর প্রয়োজনে যাত্রী ধারণক্ষমতা ১২৫০-এ বাড়িয়ে নেওয়া যাবে।
৫. বুলেট ট্রেনেও ফ্লাইটের মতো দু’টি ক্লাস থাকবে। সেগুলি হল ইকোনমি এবং এক্সিকিউটিভ ক্লাস। ৩+২ ফরম্যাটে ইকোনমি ক্লাসে আসন থাকবে।

৬. এক্সিকিউটিভ ক্লাসের আসনগুলি বেশ আরামদায়ক হবে। পাশাপাশি এই কোচগুলিতে ২+২ ফরম্যাটে আসন থাকবে।
৭. ভারতীয় রেলের তরফে জানানো হয়েছে, বুলেট ট্রেনে ঘূর্ণায়মান আসনও থাকবে, যা যাত্রীদের যাত্রাকে আরও আরামদায়ক ও মজাদার করে তুলবে। যদিও, বুলেট ট্রেনের ভাড়া এখনও নির্ধারিত হয়নি।
৭. তবে, ভারতীয় রেলওয়ের মতে, বুলেট ট্রেনের ভাড়া ফ্লাইটের থেকে কম হবে এবং রাজধানীর এসি ২ টায়ারের ভাড়ার আশেপাশে থাকবে।
৮. এই ট্রেনে এসি, টিভি, স্বয়ংক্রিয় দরজা, উচ্চ-শ্রেণির প্যান্ট্রি ওয়াশরুম, ওয়াই-ফাই এবং প্লাস্টিকের বোতল ক্রাশার মেশিনের মতো সবকিছু সুবিধা উপলব্ধ থাকবে বলেও জানা গিয়েছে।





Made in India