বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আরজি কর কাণ্ডের (RG Kar Case) পর ১০ মাস হতে চলল। দু’মাস পরই এক বছর হয়ে যাবে। এখনও এই ধর্ষণ খুন কাণ্ডে শুধুমাত্র একজনেরই সাজা ঘোষণা হয়েছে। কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে শিয়ালদহ আদালত (Sealdah Court)। যদিও তাতে সন্তুষ্ট নয় নির্যাতিতার পরিবার। তাঁদের দাবি, এখনও প্রকৃত বিচার পাওয়া যায়নি। এই আবহে তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের (CBI) বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ তুললেন তিলোত্তমার মা-বাবা।
সিবিআইয়ের ভূমিকায় খুশি নয় আরজি কর (RG Kar Case) নির্যাতিতার পরিবার!
২০২৪ সালের ৯ আগস্ট আরজি কর হাসপাতাল থেকে উদ্ধার হয়েছিল তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়ার মৃতদেহ। এই নৃশংস ধর্ষণ খুনের ঘটনা বাংলার পাশাপাশি গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। প্রথমে কলকাতা পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত করলেও পরবর্তীতে সিবিআইয়ের হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়। এবার কেন্দ্রীয় এজেন্সির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন নির্যাতিতার বাবা-মা।
তিলোত্তমার বাবা বলেন, ‘সিবিআই কোনও কাজ করছে না। আমাদের আশঙ্কা, সিবিআই টাকা খেয়ে তদন্ত ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে’। নিহত চিকিৎসক পড়ুয়ার মায়ের কথায়, ‘সিবিআই এমনভাবে চাপ তৈরি করছে যাতে কেউ মুখ না খোলে। আদালতে সিবিআই যে রিপোর্ট জমা করছে সেখানেও প্রচুর গরমিল থাকছে। সঠিক রিপোর্ট দিচ্ছে না’।
আরও পড়ুনঃ বকেয়া DA নিয়ে টানাপড়েন! কবে দেবে সরকার? সরকারি কর্মীদের জন্য বিরাট আপডেট
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ঠিকভাবে তদন্ত করছে না বলে মনে করছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও। তিনি বলেন, ‘আমরাও মনে করি সিবিআই সঠিকভাবে তদন্ত করছে না। তার মা যোগাযোগ করেছেন, আমরা তার সঙ্গে সহমত। আসলে সবটা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। সবাই জানে একা কেউ এই ঘটনা ঘটায়নি। তবে এটা সত্য আসল দোষীদের ধরা হচ্ছে না’।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কলকাতার তৎকালীন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে তদন্তের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন আরজি কর (RG Kar Case) নির্যাতিতার মা। তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী ও তৎকালীন পুলিশ কমিশনারকে তদন্তের আওতায় আনতে হবে। এনাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে, তাহলে সবটা পরিষ্কার হবে’।
জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছেন তিলোত্তমার মা-বাবা। নিহত চিকিৎসক পড়ুয়ার বাবা বলেন, ‘সাহায্যের আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র দফতরের সঙ্গে কথা বলতে বলা হয়। একটি ফোন নম্বরও দেওয়া হয়। বারবার ফোন করা হলেও কেউ ফোন ধরেননি’। আরজি কর (RG Kar Hospital) নির্যাতিতার মা-বাবা রাষ্ট্রপতির কাছেও যাওয়ার কথা ভেবেছেন বলে খবর।
আরও পড়ুনঃ দফতরে না গিয়েও হাজিরা খাতায় সই! কেষ্টকে ‘বেড রেস্টে’র পরামর্শ দেওয়া ডাক্তারের একাধিক ‘কীর্তি’ ফাঁস
বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা এই বিষয়ে বলেন, ‘ওনাদের বুঝতে হবে, সিবিআই কাজটা করছে। ওনাদের মেয়েদের খুনটা সাধারণ হত্যা নয়, এটা প্রাতিষ্ঠানিক খুন। সেই কারণে একটু সময় তো লাগবে। এটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া’।
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) আবার তিলোত্তমার মা-বাবার আফসোসের জন্য তাঁদেরকেই দায়ী করেছেন। শাসকদলের নেতা বলেন, ‘ওনারা আজ যে আফসোস করছেন, সেটার জন্য ওনারাই দায়ী। আপনারা যদি কিছু লোকের কথা বলে রাজনৈতিক মঞ্চে ঘুরে বেড়ান, তাহলে কী করে যন্ত্রণার অবসান হবে?’
উল্লেখ্য, গত বছর আগস্ট মাসে আরজি কর কাণ্ডের (RG Kar Case) পর রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল। পথে নেমেছিল প্রচুর মানুষ। আর দু’মাস পরেই এই নৃশংস ধর্ষণ খুন কাণ্ডের এক বছর হবে। তার আগে তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনল নির্যাতিতার পরিবার।