বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের দেশে একদিকে যেমন মহিলাদের সাক্ষাৎ দেবীর সাথে তুলনা করা হয় অপরদিকে দেশে এমনও কিছু প্রত্যন্ত অঞ্চল রয়েছে যেখানে আজও চরম দুর্দশার মধ্যে দিন অতিবাহিত করতে হয় নারীদের। শুধু তাই নয়, কিছু কিছু জায়গায় আবার কয়েকশ বছরের পুরোনো সব প্রথারও প্রচলন রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হল বাল্যবিবাহ (Child Marriage)। বর্তমান সময়ে বাল্যবিবাহ আইনের চোখে একটি বড় অপরাধ। তা সত্বেও দেশের বিভিন্ন স্থানে এই ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটে চলেছে।
সেই রেশ বজায় রেখেই এবার এমনই এক ঘটনা সামনে এসেছে রাজস্থানের (Rajasthan) যোধপুর জেলা থেকে। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে, যোধপুর জেলায় একটি ১৬ বছর বয়সী নাবালিকাকে তার বাবার বয়সী একজন ব্যক্তির সাথে বিয়ে দেওয়া হয়। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বরের বয়স হল ৪৫ বছর। তবে, এই বিয়ের পেছনে একটি অবাক করা কারণও রয়েছে।
জানা গিয়েছে, প্রথমে ওই নাবালিকার বড় দিদির (বয়স ২২ বছর) সাথে বিয়ে ঠিক হয় ওই ব্যক্তির। এদিকে, ওই যুবতী যখন জানতে পারেন যে তাঁর হবু বরের বয়স তাঁর থেকে প্রায় দ্বিগুণ তখন তিনি পালিয়ে যান । এদিকে, অভিযোগ ওঠে যে, এই বিয়ের জন্য ওই যুবতীর মেসো-মাসি বরের পক্ষ থেকে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা নেয়। এমতাবস্থায়, যুবতীর বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে বিপদে পড়েন তাঁরা। তাই, ওই যুবতীর বোনকেই পাত্রী হিসেবে নিয়ে আসা হয়। আর এভাবেই ওই ব্যক্তি বিয়ে করে নেন ১৬ বছর বয়সী নাবালিকাকে।
সামনে এসেছে পুরো ঘটনা: এদিকে, বিয়ে না করে পালিয়ে যাওয়া ওই যুবতীর কাছ থেকে একটি বেদনাদায়ক কাহিনিও সামনে এসেছে। ওই যুবতী জানিয়েছেন যে, মাত্র ১৩ বছর বয়সে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু, বিয়ের প্রায় ৪০ দিন পর তাঁর স্বামী মারা যান। যার ফলে তিনি তখন থেকেই বিধবা হয়ে যান। পাশাপাশি, ওই যুবতী আরও জানান যে, তখন এই সম্পর্কে তিনি কিছুই বুঝতে পারেন নি।
এমতাবস্থায়, তিনি যখন ১৮ বছর বয়সী হন তখন তিনি বুঝতে পারেন যে, তিনি ৫ বছর আগে বিয়ে করেছিলেন এবং বিধবাও হয়ে পড়েন। এমতাবস্থায় তিনি জানান, তাঁর প্রথম বিয়েটা হয়েছিল টাকা বাঁচানোর জন্য। আর দ্বিতীয় বিয়েটা দেওয়া হচ্ছিল টাকা কামানোর জন্য। যখন তিনি জানতে পারেন যে, তাঁর হবু স্বামীর বয়স ৪৫ বছর, তখন তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। এরপর তাঁর বোনকে পাত্রী করা হয়।

বাবার বিরুদ্ধে মামলা করেছে মেয়ে: এদিকে, ইতিমধ্যেই ওই যুবতী এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর বাবা সহ মোট ৪ জনের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তিনি জানান, প্রথমবার যখন বিয়ে করেন তখন তিনি জানতেন না বিয়ে বিষয়টা কি। তিনি পড়াশোনা করতে চেয়েছিলেন। এছাড়াও, ওই যুবতী জানান, তাঁর ৩ বোন ও এক ভাই রয়েছে। বড় দিদির বিয়ে আগেই হয়ে গেছে। পরিবারের সদস্যরা সবসময় মেয়েদের রীতিমতো “বোঝা” মনে করত। শুধু তাই নয়, তারা ক্রমাগত বলত যে পড়াশোনা করে কিচ্ছু হবে না। তাই খুব অল্প বয়সেই বিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে।





Made in India