বাংলাহান্ট ডেস্কঃ বয়স ১৮। এবছরই প্রথম ভোটার আনন্দ (Ananda)। দাদার কথায় সকাল সকাল দল বেঁধে বাবা-দাদাদের সাথে ভোট দিতে গিয়েছিল সে। ভোটের লাইনেও সবাই একসাথে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর ভোট দেওয়া হল তাঁর। ছুটে এল বুলেট। গুলিবিদ্ধ হয়ে সেখানেই লুটিয়ে পড়ে বছর আঠেরোর আনন্দ। হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় তাঁকে। জীবনের প্রথম ভোটই যে আনন্দর জীবন কেঁড়ে নিল, তা ভেবেই বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন আনন্দের মা বাসন্তী দেবী।
অভাবের সংসার। তবে শান্তি ছিল তাঁদের পরিবারে। ছোট ছেলে আনন্দ। নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা করে চাষবাসে মন দিয়েছিল। অন্য সময় হায়দরাবাদে গিয়ে রাজমিস্ত্রি অথবা শ্রমিকের কাজ করত সে। আর বড় ছেলে গোবিন্দ। বরাবরই বিজেপি সমর্থক হিসাবে পরিচিত সে। তবে ছোট ভাই আনন্দ সবসময় সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে থাকত। এমনকি পরিবার সুত্রে খবর অনুযায়ী ভোটের পর আনন্দের ফের হায়দরাবাদে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভোট দিতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরে আসার খবর আজও মেনে নিতে পারেনি মা। আর তাই তো বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন মা।

জ্ঞান ফিরলেই একটিই প্রশ্ন ছেলেটা কি আর ফিরবে না ? আর মা বলে ডাকবে না ? সন্তানহারা মায়ের প্রশ্নে চুপ আত্মীয় পরিজন থেকে প্রতিবেশীরা। শনিবার সাতসকালে শীতলকুচির (Sitalkuchi) পাঠানটুলি এলাকায় ৮৫ নম্বর বুথে ভোট দিতে গিয়েছিল আনন্দ। বাবা-দাদার সাথে লাইনে দাঁড়িয়েছিল সে। হটাৎই তৃণমূল-বিজেপির (TMC & BJP) সংঘর্ষে শুরু হয় বোমাবাজি, চলল গুলিও। সঙ্গে সঙ্গে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন ভোট দিতে আসা জনতা। ছুটোছুটির মধ্যে গুলি লাগে আনন্দর পিঠে। মৃত্যু হয় আনন্দর।
আর তাই তো শীতলকুচির পাঠানটুলি গ্রামে টিনের বাড়িতে এখন শুধু তাই হাহাকার। সান্তনা দিতে আসা প্রতিবেশীদের দিকে শূন্যদৃষ্টিতে তাকিয়ে আনন্দের বাবা। আর মা তো শয্যাশয়ী। বারবার জ্ঞান হারানোর পরই হাতেমুখে জল দিচ্ছেন আত্মীয়স্বজনরা। জ্ঞান ফিরলেই সেই একটাই প্রশ্ন আনন্দ কি আর মা বলে ডাকবে না ?





Made in India