বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটল পূর্ব বর্ধমানে। আবেদনকারীর নামে ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে ভিক্ষুকের টাকা “আত্মসাৎ” করার অভিযোগ উঠল খোদ তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। আর এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই রীতিমত শোরগোল পড়েছে এলাকায়।
ঠিক কি ঘটেছে?
জানা গিয়েছে যে, পূর্ব বর্ধমানের নান্দাই গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত মহসীন মন্ডল এবং তাঁর বাবা দু’জনেই বিশেষভাবে সক্ষম হওয়ায় ভিক্ষে করেই কোনোমতে দিন কাটে তাঁদের। এমতাবস্থায়, বাঁশের খুঁটি এবং ত্রিপলের ছায়া দিয়েই মাথা গোঁজার ঠাঁই তৈরি করেছেন তাঁরা। এমনকি, খোলা আকাশের নিচেই করতে হয় রান্না। যে কারণে প্রচন্ড বৃষ্টি হোক কিংবা গ্রীষ্মের দুপুরে রীতিমত টিকে থাকাই ক্রমশ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁদের।
এমতাবস্থায়, এই সহায়সম্বলহীন এবং হতদরিদ্র পরিবারও সম্মুখীন হলেন দুর্নীতির। অভিযোগ উঠেছে যে, আবাস যোজনা প্রকল্পে তৃণমূল পরিচালিত নান্দাই গ্রামপঞ্চায়েতের দ্বারা প্রতারিত হয়েছেন তাঁরা। এই প্রসঙ্গে মহসিন জানিয়েছেন, সরকারি নথিতে তাঁদের নামে বাড়ি তৈরির জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ হলেও সেই টাকা তাঁরা হাতে পাননি।
কিভাবে ঘটল এই ঘটনা?
সংশ্লিষ্ট পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, মহসীনের কাছ থেকে আগেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও আধার কার্ডের নম্বর চেয়ে নেন এলাকার দুই তৃণমূল কর্মী। এমনকি ওই নথিগুলির উপর ভর করেই ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে সরকারি টাকা তাঁরা তুলে নেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি এই পুরো ঘটনায় পঞ্চায়েত প্রধান ও এক পঞ্চায়েত সদস্যা জড়িত রয়েছেন বলেও জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে বিডিওর কাছে।
এই প্রসঙ্গে মহসীন জানিয়েছেন, “আমার বাড়িতে দু’জন গিয়ে আমার ডকুমেন্টস গুলো চেয়ে নেয়। দু’মাস পরে যখন আমি জিজ্ঞেস করি তখন তারা বলে ওপর থেকে টাকা ছাড়িয়ে নিয়ে আসতে হবে। এখন আমি জানতে পারি আমার বাড়ি তৈরির জন্য টাকা চলে এসেছে।”
এদিকে, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নান্দাই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ঝুমুর ঘোষকে বারংবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। অপরদিকে, সমস্ত অভিযোগকে কার্যত উড়িয়ে দিয়েছেন পঞ্চায়েত সদস্যা অপর্ণা সাঁতরা। তিনি জানিয়েছেন, “আমরা এই বিষয়ে কিছুই জানিনা। সম্পূর্ণ বানিয়ে মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে।”

যদিও, এই পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন কালনা ২ নম্বর ব্লকের বিডিও সেবন্তী বিশ্বাস। তিনি বলেছেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা প্রতিটি জিনিস খতিয়ে দেখব। আমরা আমাদের অফিসারদের দিয়ে একটা তদন্তও করছি।”





Made in India