বাংলাহান্ট ডেস্ক : এবার কি বিশ্বের প্রথম বৈদ্যুতিন যুদ্ধের পথে হাঁটতে চলেছে আমেরিকা ও চিন (China)? উপগ্রহ সিগন্যাল আটকানোর জন্য ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আমেরিকার (United States of America) জ্যামার (Jammer) বসানোর পরিকল্পনা অন্তত সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে।
চিনকে (China) শেষ করতে মরিয়া আমেরিকা
গত ডিসেম্বরে আমেরিকার ‘স্পেস র্যাপিড ক্যাপাবিলিটিস’ অফিসের ডিরেক্টর কেলি হ্যামেট জানিয়েছিলেন, ‘কিল চেন’ ব্যাহত করার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে ‘রিমোট মডুলার টার্মিনাল (আরএমটি)’ নামে পরিচিত জ্যামার সিস্টেমটি। এই ‘কিল চেন’ এমন একটি সামরিক পদ্ধতি যা শত্রুদের আক্রমণের পরিকল্পনা চিহ্নিতকরণের কাজে লাগে।

একই সাথে হ্যামেট জানান, চিনের (China) নজরদারি উপগ্রহ, বিশেষ করে ‘ইয়াওগান’ সিরিজ়ের উপগ্রহগুলির সিগন্যাল আটকে দেওয়াই লক্ষ্য জ্যামারগুলির। জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে জ্যামার বসানোর অনুমোদন দিয়েছে আমেরিকার ‘স্পেস অপারেশনস কম্যান্ড’। প্রথমে মনে করা হচ্ছিল, প্রায় ১১ টি জ্যামার বসানো হতে পারে আমেরিকার পক্ষ থেকে।
আরোও পড়ুন : কনফার্ম খবর! কেন্দ্রের নজরে এই পাঁচ সরকারি ব্যাঙ্ক, নেওয়া হল বড়সড় সিদ্ধান্ত, কী হবে গ্রাহকদের?
তবে এখন জানা যাচ্ছে, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ২০০ টি জ্যামার বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছে আমেরিকার সামরিক বাহিনী। চিন (China) ও আমেরিকা গোটা বিশ্বে নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে উপগ্রহের মাধ্যমে। সেই নজরদারি এড়িয়ে যে কোনও কাজ করাই বেশ কঠিন। এই নজরদারিকে কেন্দ্র করে মাঝেমধ্যেই দ্বন্দ্বে জড়ায় দুই দেশ।
আরোও পড়ুন : ISRO-র হাত ধরে ফের তৈরি ইতিহাস! মহাকাশে “আলিঙ্গন” দুই স্যাটেলাইটের, নজির গড়ল ভারত
অতীতে চিনের (China) বিরুদ্ধে ‘ইয়াওগান’ সিরিজ়ের একাধিক উপগ্রহ সামরিক কাজে ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছে আমেরিকা। চিনের ‘ইয়াওগান-৪১’ নামক উপগ্রহটির বিরুদ্ধেও রয়েছে তেমনই অভিযোগ। যদিও চিনের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছিল, ‘ইয়াওগান-৪১’ মূলত ব্যবহার করা হবে জমি জরিপ, পর্যবেক্ষণের মতো অসামরিক কাজে।

দাবি করা হয়,‘ইয়াওগান-৪১’ এর মাধ্যমে গোটা বিশ্বে নজরদারি চালানো হচ্ছে। বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকাকে। ওয়াশিংটনের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ‘সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ় (সিএসআইএস)’-এর একটি প্রতিবেদন বলছে, মহাকাশ থেকে ছোট ছোট গাড়ির উপর নজরদারি করতেও সক্ষম চিনের ইয়াওগান সিরিজের উপগ্রহগুলি।
পাশাপাশি, ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় কম্যান্ডের উপরেও নজরদারি চালাতে ওস্তাদ চিনের এই উপগ্রহগুলি। তাই ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের নজরদারি দুর্বল করতে আমেরিকার অস্ত্র শক্তিশালী জ্যামার। নতুন এই জ্যামার বসানোকে কেন্দ্র করেই আমেরিকা ও চিনের মধ্যে বৈদ্যুতিন যুদ্ধ (War) সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা দেখা গিয়েছে।

এই প্রসঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার ‘স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউট’-এর মহাকাশ নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ম্যালকম ডেভিস বলেছেন, ‘‘যদি আমেরিকা ওই জ্যামার বসায়, তা হলে চিনও শক্তি প্রদর্শন করবে। এর ফলে শুরু হবে এক প্রকার বৈদ্যুতিন যুদ্ধ, যা হবে বিশ্বের প্রথম বৈদ্যুতিন যুদ্ধ।’’ এরই সাথে তাঁর আরো বক্তব্য, ‘‘আমেরিকার জ্যামারগুলি শনাক্ত করার পরে পাল্টা বৈদ্যুতিন হামলা চালাতে পারে চিন। আর তা থেকেই শুরু হবে এই যুদ্ধ। তবে এই যুদ্ধে কোনও অস্ত্র কাজ থাকবে না। পুরোটাই হবে বৈদ্যুতিন যুদ্ধ।’’





Made in India