দশমীতে কৈলাসে ফিরে গিয়েছেন উমা, আপামর বাঙালির মন খারাপের দিনেই ফের বেজে উঠল ঢাকের বাদ্যি। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন গ্রামে শুরু হল দেবীর অন্য এক রূপের বোধন। তবে মহিষাসুর মর্দিনী রূপে নয়, দেবী এখানে সাধারণ নারী রূপে পূজিতা। লক্ষী, গনেশ, কার্তিক, সরস্বতী থাকলেও হিমালয় কন্যা এখানে ব্যাঘ্রবাহনা।

৫০০ বছরের বেশি সময় ধরে ডুয়ার্সের এক বিস্তীর্ণ অঞ্চল ধরে চলে আসছে দেবীর এই রূপের পুজো। দেবী এখানে পূজিতা হন মা ভান্ডানি রূপে। উত্তরবঙ্গের রাজবংশী অধ্যুষিত গ্রামগুলিতেই মূলত এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পূজার প্রচলন ঘিরে রয়েছে একটি আকর্ষণীয় মিথ।
জনশ্রুতি অনুসারে বৈকুন্ঠপুর রাজবাড়ি থেকে কৈলাসে যাওয়ার পথে গভীর অরন্যে পথ হারিয়ে দেবী এক সাধারণ নারীর রূপ নিয়ে কাঁদতে থাকেন। সেই সময় এক রাখাল তাকে নিজের বাড়িতে আশ্রয় দেয়৷ রাখালের ওপর সন্তুষ্ট হয়ে দেবী তাকে বর দিতে চান।
রাখাল দেবীকে জানান, বনাঞ্চল কৃষির অনুপযুক্ত। যে কারনে তাদের খাদ্যের অভাব লেগেই আছে। তাই দেবী যেন ঐ অঞ্চলকে শস্য শ্যামলা করে দেন। দেবী তেমনই বর দেন। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত প্রতিবছরই বিসর্জনের ঢাকের বোলে যখন বিদায়ের করুন সুর বেজে ওঠে, এখানে বাজে উমার আগমন বার্তা।
রাজবংশীদের পাশাপাশি অন্য সম্প্রদায়ের মানুষেরাও এই দেবীর আরাধনায় মেতে ওঠেন প্রতিবার। তবে এবার সেই জাঁকজমক কম হলেও দেবীর আগমনে উৎসব মুখর হয়েছে রাজবংশী গ্রামগুলি।





Made in India