বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শিয়রে লোকসভা নির্বাচন। এপ্রিল থেকেই শুরু হচ্ছে ‘দিল্লি দখলের লড়াই’। তার আগে দুষ্কৃতিদের হাতে খুন হলেন তৃণমূল (Trinamool Congress) পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার নাকাশিপাড়ায় (Nakashipara Murder Case)। বুধবার রাতে ঈদের বাজার করে বাড়ি ফেরার সময়ই হামলার মুখে পড়েন পঞ্চায়েত সদস্যা তাগিরা বিবির স্বামী জহিদুল শেখ (৩৫)। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। অভিযোগের তীর কংগ্রেস ও সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতিদের দিকে। যদিও সিপিএমের দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলেই এই ঘটনা।
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, গতকাল রাতে বন্ধুর গাড়ি করে বাড়ি ফিরছিলেন স্থানীয় তৃণমূল (TMC) পঞ্চায়েত সদস্যা তাগিরা বিবি এবং তাঁর স্বামী জহিদুল। গাড়িতে ছিলেন তাঁর ছেলে এবং পারিবারিক বন্ধু। জহিদুলই গাড়ি চালাচ্ছিলেন। রাত ৯:৩০ নাগাদ বাড়ির কাছাকাছি ঘুনির মোড় পেরোতেই রাস্তায় একটি গাছ পড়ে থাকতে দেখেন তাঁরা। জহিদুল গাড়ি থামিয়ে কাঁচ নামান, এরপর বাইরের উঁকি দিতেই শুরু হয় বোমাবাজি।
প্রায় ১০ জন দুষ্কৃতি এসে গাড়িতে বসে থাকা সকলকে এলোপাথাড়ি কোপাতে শুরু করেন। তাগিরা বিবির দাবি, তাঁদের মূল লক্ষ্য ছিলেন জহিদুল। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি। বাকিদের গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে বেথুয়াডহরি হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। সেখানে জহিদুলকে মৃত ঘোষণা করা হয় এবং অন্যদের শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুনঃ ‘প্রেম, ভালোবাসা করে…’, কেন বিয়ে করলেন না দিলীপ ঘোষ? এতদিনে ‘ফাঁস’ করলেন মা
আক্রান্তদের অভিযোগ, এই হামলার ঘটনার নেপথ্যে রয়েছেন সিপিএম (CPM) এবং কংগ্রেস (Congress) আশ্রিত দুষ্কৃতিরা। যদিও তারা এই দাবি মানতে নারাজ। বরং সামনে এসেছে তৃণমূল শিবিরের গোষ্ঠীকোন্দলের কথা। স্থানীয় সূত্রে খবর, একটি জমি দখল নিয়ে বহুদিন ধরে নাকাশিপাড়া এলাকার হরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের জুব্বর গোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর ঝামেলা চলছিল। নিহত জহিদুল জুব্বরের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন। গতকালও জুব্বরের গাড়ি নিয়েই ঈদের বাজার করতে গিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, জুব্বর এবং তাঁর বিরোধী গোষ্ঠী, উভয়পক্ষই শাসকদলের অংশ বলে খবর।
আহত তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যা তাগিরা আজ বলেন, ‘রাস্তায় খেজুর গাছ ফেলে আমাদের গাড়ি আটকানো হয়। আমার স্বামী কাঁচ নামিয়ে দেখতে গেলে বোমা ছোঁড়া হয়। নিমেষের মধ্যে ১০-১২ জন এসে আমাদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে শুরু করে। হামলাকারীরা প্রত্যেকেই পরিচিত। তাঁরা কংগ্রেস এবং সিপিএম আশ্রিত’।

ভোটের মুখে পঞ্চায়েত সদস্যার ওপর আক্রমণ এবং তাঁর স্বামীর মৃত্যুর ঘটনায় অভিযোগের তীর কংগ্রেস এবং সিপিএমের দিকে থাকলেও তাঁরা সেই দাবি অস্বীকার করেছেন। কৃষ্ণনগরের সিপিএম প্রার্থী এমএস সাদি এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘নানান জায়গায় তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী জমি সহ বিভিন্ন আর্থিক কারণে নিজেদের মধ্যে অশান্তিতে লিপ্ত। এমনই গণ্ডগোলের কারণে এই ঘটনা হয়ে থাকতে পারে। সিপিএম এই ঘটনার সঙ্গে মোটেই যুক্ত নয়’।





Made in India