বাংলা হান্ট ডেস্ক: যখন ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল তখন সকলের মনে একটাই প্রশ্ন ছিল যে, ভারত (India) কাকে সমর্থন করবে? এমনিতেই ভারতের সাথে ইরানের কয়েক দশকের পুরনো সম্পর্ক রয়েছে। অপরদিকে, ইজরায়েল সর্বদা প্রতিটি কঠিন পরিস্থিতিতে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে। তাই, ভারতের জন্য এটি ছিল এক দ্বিধাগ্রস্ত পরিস্থিতির মতো। কারণ, এক্ষেত্রে একটি দেশকে সমর্থন করা মানে অন্যকে রাগিয়ে দেওয়া। কিন্তু, ভারত অসাধারণ কূটনীতির প্রদর্শন করেছে। যার ফলস্বরূপ, ইরান ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। অপরদিকে, ইজরায়েলও খুশি।
ভারতের (India) পদক্ষেপে খুশি ইরান-ইজরায়েল:
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ইতিমধ্যেই বুধবার ইরানের দূতাবাস একটি বিবৃতি জারি করে ভারত (India) এবং ভারতীয় জনগণকে তাদের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে। দূতাবাস জানিয়েছে যে, “ভারতের একাধিক রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে সাংসদ, সামাজিক সংগঠন, সাংবাদিক, শিক্ষক, ধর্মীয় নেতা এবং সাধারণ নাগরিক ইরানের সাথে সংহতি প্রকাশ করেছেন। এই সমর্থন জনসভা, শান্তি মিছিল এবং বিবৃতির মাধ্যমে মিলেছিল। যা আমাদের সাহস এবং শক্তি দিয়েছে। ইজরায়েলের আক্রমণের সময়ে ভারতের জনগণ ইরানের সাথে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়েছিলেন।”
“জয় ইরান-জয় হিন্দ”: দূতাবাস আরও জানিয়েছে, ভারত (India) ও ইরানের জনগণের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক ও আঞ্চলিক বিষয়ে অব্যাহত সহযোগিতা পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তি প্রদান করে। অবশ্যই, আমরা মহান ভারতের জনগণ এবং প্রতিষ্ঠানগুলির দ্বারা প্রদর্শিত অকৃত্রিম এবং অমূল্য সমর্থনের জন্য আমাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।” সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, বিবৃতির শেষে লেখা রয়েছে “জয় ইরান-জয় হিন্দ”। এই শব্দগুলি ইতিমধ্যেই মানুষের হৃদয় স্পর্শ করেছে।
প্রশংসা করেছে ইজরায়েলও: জানিয়ে রাখি যে, এর আগে, ইজরায়েলের বিদেশ মন্ত্রক ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী নীতি থেকে শুরু করেনপ্রযুক্তিগত সহযোগিতা এবং কৌশলগত ভারসাম্যের ক্ষেত্রে প্রকাশ্যে প্রশংসা করেছিল। তারা ভারতের (India) সমর্থনের জন্যও ধন্যবাদ জানায়। ইজরায়েল বলেছে, “আমাদের জন্য ভারত কেবল একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদারই নয়, বরং এমন একটি জাতি যা বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতায় নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করছে।” পাশাপাশি ও, মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্কটের প্রতি “ন্যায্য ও ভারসাম্যপূর্ণ” দৃষ্টিভঙ্গির জন্য ইজরায়েল ভারতের প্রশংসা করে। উল্লেখ্য যে, এই সংঘর্ষে ভারত উভয় পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছিল এবং মানবিক সহায়তা প্রদান করেছিল। এর পাশাপাশি, ভারত আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার পক্ষেও ছিল।
আরও পড়ুন: লিডস টেস্টে পরাজয়ের পর সময় নষ্ট করতে নারাজ টিম ইন্ডিয়া! নিল বড় পদক্ষেপ
কেন ভারতের প্রশংসা করা হচ্ছে: প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে ভারত (India) ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছিল। ভারত প্রকাশ্যে ইজরায়েলকে সমর্থন করেনি বা ইরানের সমালোচনাও করেনি। বরং, ভারত শান্তির আবেদন করার পাশাপাশি সংযম বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছিল। যাতে উভয় দেশের সাথে সম্পর্ক নিরাপদ থাকে। এছাড়াও, ভারত যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় চিকিৎসা ও ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়েছে। যার ফলে মানবিক শক্তি হিসেবে ভারতের ভাবমূর্তি আরও দৃঢ় হয়েছে। এর ফলে বিশ্বমঞ্চেও ভারতের এক ভিন্ন ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: হাত মেলালেন দুই ধনকুবের! আম্বানি-আদানির মধ্যে হল বিরাট চুক্তি, বদলাবে ভারতের এই সেক্টরের ছবি
পাশাপাশি, ভারত (India) জাতিসংঘে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিল। ভারত কোনও প্রস্তাবের অংশ হয়নি এবং যুদ্ধবিরতির পক্ষে থেকে প্রয়োজনীয় সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছিল। আরও একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কেবল ইজরায়েলের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখেননি, বরং ইরানের নেতাদের সঙ্গেও কথা বলেছেন। তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, এটি যুদ্ধের সময় নয়। কেবল আলোচনার মাধ্যমেই এই সঙ্কটের সমাধান হবে।