বাংলা হান্ট ডেস্ক : সাইক্লোনে বিদ্ধস্ত গুজরাট (Gujarat)! চারিদিকে শুধু ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন। এরই মধ্যে প্রকাশ্যে এক চাঞ্চল্যকর খবর। অশান্তি ছড়িয়ে পড়ল একটি দরগাকে কেন্দ্র করে। একদল উন্মত্ত মানুষ পাথর ছুঁড়ল পুলিসকে লক্ষ্য করে। হামলায় আহত পুলিসের ডিএসপি, মহিলা পুলিসের পিএসআই সহ একাধিক পুলিস কর্তা। এখানেই শেষ নয়, পাথরবাজির পর পুলিস থানাতেও হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা।
এরই মধ্যে প্রকাশ্যে এল এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। সেদিন রাতের হিংসায় সরকারি গাড়ির পাশাপাশি ভাঙচুর করা হয় বেসরকারি গাড়িগুলিকেও। এরই মধ্যে একটি বাস বিজয়নগর থেকে জুনাগড়ের দিকে যাচ্ছিল। সেই বাসটিকেও আক্রমণ করা হয়। ওই বাসের চালক, টিকিট কনডাক্টর ও বয়স্ক যাত্রী আহত হন। তাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ওই বাসের চালক এবং কনডাক্টর সেদিনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানান পুলিসকে।
তাঁরা বলেন, ‘আমরা জুনাগড় ডিপো ছাড়ি রাত ১০:১৫ মিনিটে। বাসে মোট ২৫ জন যাত্রী ছিল। বাস মাযেওয়ারি গেটে পৌঁছন মাত্রই এক দল লোক পাথর ছুঁড়তে শুরু করে। অন্তত ৫০০ লোক আমাদের আক্রমণ করে। বাসের জানালা ভেঙে দেয়। বাইরে থেকে বাসের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপরই বাসে আগুন লাগানোর চেষ্টা করা হয়। সময়নত পুলিস পৌঁছে আমাদের উদ্ধার করে।’
বাসের চালক আসিফ কুরেশি জানান, ‘বিক্ষোভকারীরা বড় বড় পাথর ছুঁড়ছিল। একটা পাথর চালকের আসনের দিকের কাচ ভেঙে আমার ডান হাতের কুনুইয়ে লাগে। যাত্রী তখনও বাসের ভিতর। সিটের আড়ালে লুকিয়ে কোনও ভাবে নিজেদের প্রাণ বাঁচাচ্ছিলেন। আমি হাতজোড় করে বলি, আমার নাম আসিফ, দয়া করে আমাদের যেতে দাও। আমার নাম শুনে তারা আমাদের ছেড়ে দেয়।’

কী হয়েছিল ঘটনা? জুনাগড়ের উপরকোট এলাকায় একটি অবৈধ দরগা রয়েছে। এটিকে নিয়ে স্থানীয় মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সূত্রপাত হয় বহু আগে থেকেই। দরগাকে স্থানান্তর করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে নোটিশ পাঠায় প্রশাসন। নোটিশ পেয়েই ঘাবড়ে যায় ওই দরগার উপর বিশ্বাস রাখা মুসলমান সমাজ। এরপরই গতকাল শুক্রবার বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে তারা।
প্রতিবাদের মাঝে হিংসাত্মক ভিড় নিশানা করে পুলিসকে। তাঁদের লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ে বিক্ষোভকারীরা। এই হামলায় পুলিসের ডেপুটি সুপারিন্টেন্ডেন্ট এবং এক মহিলা পিএসআই জখম হন। এরপরও শান্ত হয়নি বিক্ষোভকারীদের ভিড়। সুযোগ বুঝে মজেবড়ী থানা আক্রমণ করে তারা। সেখানে রীতিমতো তাণ্ডব চালায়। একাধিক পুলিসের গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।
হিংস্র ভিড়কে সামলাতে বিরাট পুলিস বাহিনী মোতায়েন করা হয়। চালানো হয় লাঠি। ছোড়া হয় টিয়ার গ্যাস। এরপরই শান্ত করা সম্ভব হয় ওই ভিড়। শান্ত হয়ে আসে গোটা এলাকা। তবে এখনও থমথমে গোটা এলাকা। মোতায়েন রয়েছে বিরাট পুলিস বাহিনী। আপৎকালীন পরিস্থিতিকে সামলাতে হাজির র্যাপিড অ্যাকশন বাহিনীও।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর গতকাল সন্ধ্যা থেকে এলাকায় ভিড় জমতে শুরু করে। রাত ৯ টার মধ্যেই ২০০-৩০০ লোক জমে যায়। অবস্থা খারাপ দেখে পৌঁছে যায় পুলিস। ভিড় খালি করতে গিয়েই পুলিসের সঙ্গে ঝামেলা বাঁধে। তারপরই শুরু হয় পাথর ছোঁড়া।





Made in India