বাংলাহান্ট ডেস্ক: ‘আমি বনফুল গো’, গানটা বেজে উঠলেই এখনো চোখের সামনে ফুটে ওঠে একটা মুখ। কানন দেবী (Kanan Devi), যাঁর রূপের ছটা এবং কণ্ঠের মাধুর্যে বুঁদ হয়েছিল সমগ্র চলচ্চিত্র জগৎ। সাদা কালো যুগের অলরাউন্ডার সুন্দরী নায়িকা দর্শকদের মনে বিশেষ এক জায়গা ধরে রেখেছেন। কিন্তু তিনি সবার মনে রয়ে গেলেও সভ্যতার করাল গ্রাসে যেতে বসেছে অভিনেত্রীর স্মৃতি। ভাঙা পড়ছে কানন দেবীর বাড়ি।
বাঁশদ্রোণীর সূর্যনগরের আদি গঙ্গার পাশে বাড়ি রয়েছে কানন দেবীর। বাড়িটির সঙ্গে জড়িয়ে বহু স্মৃতি। যত্ন করে বাড়ি বানিয়েছিলেন অভিনেত্রী। নিজের প্রার্থনার জন্য একটি মন্দিরও বানিয়েছিলেন সেই বাড়ির ভেতরে। পুরনো বাড়ির সামনে পরবর্তীকালে আরো একটি বাড়ি তৈরি করেছিলেন কানন দেবী। কিন্তু সেসবই এখন স্মৃতি হওয়ার পথে।

১৯৯২ সালে অভিনেত্রীর মৃত্যুর পরেই তাঁর বাড়িটি পরিবারের তরফে বিক্রি করে দেওয়া হয় বলে খবর। বর্তমানে ফ্ল্যাট সংষ্কৃতির যুগে এমন সুযোগ হাতছাড়া করতে চায়নি প্রোমোটাররা। ইতিমধ্যেই সে বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ওই বাঁশদ্রোণী এলাকাতেই আরেক কিংবদন্তি ছবি বিশ্বাসের বাড়িও ভাঙা পড়েছে বছর কয়েক আগে।
সপ্তাহ কয়েক আগেই গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি ভাঙার ছবি ভাইরাল হয়েছিল। দক্ষিণ কলকাতার লেক গার্ডেন্সে পোস্ট অফিসের গলিতে একটি দোতলা বাড়িতে থাকতেন গায়িকা এবং তাঁর স্বামী সুরকার শ্যামল গুপ্ত। তাঁর নামেই বাড়ির বাইরের দেওয়ালে ঝুলত এস গুপ্ত লেখা নেমপ্লেট। তা রয়েছে এখনো। কিন্তু বাড়ি ভাঙা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ধ্বংসস্তূপে হারিয়ে যাবে সেটাও।
বাংলা সাংষ্কৃতিক জগৎকে যে যে কিংবদন্তিরা সমৃদ্ধ করেছেন তাঁদের স্মৃতি সংরক্ষণ করারই কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। একে একে শহরের বুক থেকে হারিয়ে যাচ্ছে বা যেতে বসেছে তাঁদের বসত ভিটে, যেগুলো সংরক্ষণ করলে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন তো হতই, উপরন্তু দর্শনীয় স্থানও হয়ে উঠত। এভাবে একের পর এক গুণী শিল্পীদের স্মৃতি মুছে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আমজনতাও।





Made in India