বাংলাহান্ট ডেস্ক: সময় এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশ অবনতি হচ্ছে সঙ্গীতের দুনিয়ায়। এমনি মনে করেন প্রবীণ সঙ্গীতশিল্পী কবিতা কৃষ্ণমূর্তি (Kavita Krishnamurthy)। অটো টিউন আর যান্ত্রিক কারিকুরি সঙ্গীতের স্বাভাবিক মাধুর্য নষ্ট করে দেয়। মডার্ন যুগে সঙ্গীতশিল্পীরা আর নিজেদের কণ্ঠস্বর, সুরের উপরে ভরসা করেন না। অটো টিউনেই কেরিয়ার নির্ভর করে নতুন অনেক সঙ্গীতশিল্পীর।
কবিতা কৃষ্ণমূর্তির এই মন্তব্য চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছিল বলিউডে। ২০১৬ সালে বেঙ্গালুরুতে একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন সঙ্গীতশিল্পী। সেখানেই সঙ্গীত জগতের সেকাল আর একালের মধ্যে পার্থক্যের কথা তুলে ধরেন তিনি। সেই সঙ্গে বর্তমানে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির কতটা বদল ঘটেছে তা নিয়েও খোলাখুলিভাবে কথা বলতে শোনা গিয়েছিল তাঁকে।

কবিতা বলেছিলেন, ‘আমার মতো গায়িকারা একটা পাঁচ মিনিট লম্বা গান গাইতে পারে। আমি খৈয়ম সাবের জন্য গেয়েছিলাম। আর ওঁর গানগুলো ছিল গজল স্টাইলে। লাইনের মাঝে শ্বাস নেওয়ার অবকাশ থাকত না। আপনারা জানেন খৈয়ম সাবের কবিতা কেমন ছিল। আর এখন যখন আমাকে কোনো গান রেকর্ডিংয়ের জন্য ডাকা হয়, আমাকে একটাই শব্দ বারবার গাইতে হয় আর তারপর একটা ছোট লাইন গাইতে হয়। ব্যস হয়ে গেল’।
এখনকার গান রেকর্ডিং কীভাবে হয় সেটা বলতে গিয়ে কবিতাজি আরো বলেছিলেন, এখন এভাবেই গান তৈরি করা হয়। তিনি যদি এও বলেন যে, একটা লাইন তিনি আবার গাইবেন যাতে সুরটা আরো সঠিক হয়, তাহলে তাঁকে বলা হয় তার কোনো দরকার নেই। অটো টিউন রয়েছে তো, যন্ত্রের কারিকুরিতেই গান তৈরি হয়ে যাবে।
ক্ষোভ এবং বিস্ময় প্রকাশ করে কবিতা বলেছিলেন, ‘এখন আর সুর, তাল ঠিক রেখে গাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। আপনি একটা লয়ে গাইবেন, সেটা অন্য লয়ে করে দেওয়া যাবে’। এখানেই থামেননি শিল্পী। তিনি আরো বলেছিলেন, ‘এখন আর এমন গায়িকার দরকার নেই যে সুর, তাল বুঝবে। তাহলে গায়িকার মধ্যে কী থাকা দরকার?’
এরপর নিজেই উত্তর দিয়েছিলেন কবিতা, ‘এখন শুধু অঙ্গভঙ্গি দরকার। সেটা ঠিক থাকলে সবাই গান গাইতে পারবে’। তিনি যে খুব একটা ভুল কিছু বলেননি তা বোঝা যায় বর্তমানের কিছু কিছু গানগুলো দেখেই। আর অটো টিউনের উপস্থিতির কথা তো খোদ ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গীত পরিচালক, সুরকাররাই স্বীকার করে নেন। কিন্তু এই অটো টিউন মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিকে যে কোন অবনতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে তা নিয়ে আশঙ্কাও প্রকাশ করতে দেখা যায় প্রবীণ শিল্পীদের।





Made in India