গর্ভে সন্তান, এই অবস্থায় কীভাবে পরীক্ষায় বসব? হাইকোর্টে ছুটলেন চাকরিহারা শিক্ষিকা

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ে বাতিল হয়েছে প্রায় ২৬,০০০ চাকরি (SSC Recruitment Case)। গত এপ্রিল মাসের এই রায়ে কাজ হারিয়েছেন ২৫,৭৫২ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী। গর্ভবতী অবস্থায় চাকরিহারা হয়ে পড়েছেন উত্তর ২৪ পরগণার বিবেকানন্দ পল্লির এক শিক্ষিকা (School Teacher)। এবার তিনিই কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হলেন। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কীভাবে পরীক্ষায় বসবেন? এই প্রশ্ন তুলে স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।

হাইকোর্টে (Calcutta High Court) শুনানি কবে?

২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেছিলেন উত্তর ২৪ পরগণার ওই শিক্ষিকা। ২০১৮ সাল থেকের রহড়ার একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। তবে ২৬,০০০ কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তিনি চাকরিহারা হয়ে পড়েছেন। ওই শিক্ষিকার দাবি, তিনি যোগ্য। নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করার পরেই চাকরি পেয়েছিলেন।

এদিকে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মতো ইতিমধ্যেই নয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে এসএসসি (School Service Commission)। সোমবার থেকে অনলাইনে আবেদন শুরু হবে। ১৪ জুলাই অবধি চলবে। সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে পরীক্ষা। এই অবস্থায় হাইকোর্টে ওই গর্ভবতী শিক্ষিকা বলেন, ‘একজন মহিলা ৭-৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কীভাবে পরীক্ষা দেবেন? তাঁর পক্ষে কি স্বাভাবিকভাবে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব?’

আরও পড়ুনঃ অবশেষে বকেয়া DA-র অংশ হাতে পাবেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা! শীঘ্রই বিজ্ঞপ্তি দিতে পারে সরকার

ওই শিক্ষিকার আইনজীবী শুভ্রপ্রকাশ লাহিড়ী বলেন, ‘সকল মানুষের জীবন নিয়ে স্বাধীন সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার আছে। সুপ্রিম কোর্টের চাকরি বাতিলের রায়ের আগে আমার মক্কেল অন্তঃসত্ত্বা হন। ভবিষ্যতে কী হবে উনি জানতেন না। কারোর চাকরি থাকবে না সেটা তাঁর পক্ষে জানা সম্ভব ছিল না! চলতি বছরই আবার ওনাকে পরীক্ষায় বসতে হবে’।

শুভ্রপ্রকাশ আরও বলেন, ‘এই অবস্থায় সাংসারিক জীবনে উনি একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে এখন দেখা যাচ্ছে, ওনাকে পরীক্ষা দিতে হবে। এই সকল প্রার্থীর জন্য বিজ্ঞপ্তিতে অন্য কোনও সুরাহা নেই। সেই জন্য বিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করে মামলা করা হয়েছে’।

Calcutta High Court

ওই শিক্ষিকার আইনজীবী জানান, এসএসসির (SSC) বিজ্ঞপ্তিতে এই সকল প্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ শিথিল করতে উচ্চ আদালতে আবেদন জানাবেন। এছাড়াও জানা যাচ্ছে, কমিশনের বিজ্ঞপ্তির আরও কিছু অংশে আপত্তি জানিয়ে ওই শিক্ষিকা হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

ইতিমধ্যেই তাঁর আবেদন গ্রহণ করেছে হাইকোর্ট। এই সপ্তাহেই শুনানি হতে পারে। বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের বেঞ্চে এই মামলা ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।

উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতির জেরে গত বছরই ২০১৬ সালের এসএসসির সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। সুপ্রিম কোর্ট সেই রায় বহাল রেখেছে। সেই সঙ্গেই নতুন করে নিয়োগের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হলেন চাকরিহারা এক শিক্ষিকা। গর্ভবতী অবস্থায় কীভাবে পরীক্ষায় বসবেন? এই প্রশ্ন তুলে কমিশনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে গিয়েছেন তিনি।

Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত। রাজনীতি থেকে বিনোদন, ভাইরাল থেকে ভ্রমণ, সব ধরণের লেখাতেই সমান সাবলীল।