বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রথম স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে ছেড়ে মুম্বইয়ে সংসার পেতেছিলেন বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়। মায়ানগরীতে অগাধ সাফল্য পেলেও টালিগঞ্জে ‘ভিলেন’ হয়েই ছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের (Prosenjit Chatterjee) বাবা। বুম্বাদার মা রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কেন বিয়ে ভেঙেছিল তা নিয়ে এতদিন সেভাবে কথাও বলতে দেখা যায়নি তাঁকে। তবে এবার আনন্দলোকে প্রকাশিত আত্মজীবনীতে এই নিয়ে খোলামেলা কথা বললেন তিনি।
প্রসেনজিৎ (Prosenjit Chatterjee) জননীর সঙ্গে কেন ডিভোর্স হয়েছিল বিশ্বজিতের?
বর্ষীয়ান অভিনেতা জানান, নায়িকাদের সঙ্গে তাঁর অনস্ক্রিন রোম্যান্স নিয়ে সন্দেহে ভুগতেন প্রথম স্ত্রী রত্না। আত্মীয় এবং পরিচিতরা সর্বক্ষণ তাঁকে প্ররোচণা দিত যে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছে স্বামী। আর তা নিয়েই দু’জনের মধ্যে অশান্তি হতো। এমনকি সন্তানদের সামনে রত্না তাঁকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতেন বলেও দাবি করেছেন বিশ্বজিৎ (Biswajit Chatterjee)।
অভিনেতা বলেন, ১৯৬০ সালে ‘মায়ামৃগ’ ছবি রিলিজের পর রত্নার সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েছিলেন। সবকিছু জেনেশুনেই তাঁকে বিয়ে করেছিলেন রত্না (Ratna Chatterjee)। পেশার খাতিরে নায়িকাদের সঙ্গে অনস্ক্রিন রোম্যান্সের বিষয়টাও তাঁর অজানা ছিল না। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি এসব মেনে নিতে পারেননি। প্রবীণ অভিনেতা বলেন, ‘আমায় ওর জন্য যে পরিমাণ মানসিক অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে, কাঁদতে হয়েছে, সেটা কোনোদিন ভুলব না। আমার ওপর চিৎকার করতো, আমি একা মেক আপ রুমে বসে কাঁদতাম। রত্না খুব অ্যারোগেন্ট ছিল। আমার কোনও কথা শুনতো না। আসলে ওর কিছু আত্মীয় ও কাছের বন্ধুবান্ধব ছিল যারা ওর মাথা খেত’।
আরও পড়ুনঃ হানিমুন থেকে ফিরেই অসুস্থ কাঞ্চন-শ্রীময়ী! হঠাৎ কী হল তারকাজুটির?
বুম্বাদার (Prosenjit Chatterjee) বাবা বলেন, শুধু তাঁকে অপমান করাই নয়, সন্তানদের মনের মধ্যেও তাঁকে নিয়ে বিষ ঢুকিয়েছিলেন প্রথম স্ত্রী। বিশ্বজিৎ বলেন, ‘বুম্বা এখন সব বুঝতে পারলেও, আমি পল্লবীকে কোনোদিন ক্ষমা করব না’। অভিনেতা জানান, রত্নার পুরুষ বন্ধুরা তাঁদের বেডরুমে ঢুকে আলমারি থেকে টাকা পয়সা নিয়ে নিত। একদিন সহ্যের বাঁধ ভাঙে তাঁর। এরপর সোজা বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যান। পার্ক স্ট্রিটে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন টলিপাড়ার এই জনপ্রিয় অভিনেতা। এরপর পাড়ি দেন মুম্বই।
বিশ্বজিৎ বলেন, বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার পর রত্নাই তাঁকে বিবাহবিচ্ছেদের নোটিশ পাঠান। তা সত্ত্বেও স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে মুম্বইয়ের বাড়িতে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু প্রথম স্ত্রী মানেননি। তিনি বলেন, এমন বহু দিন গিয়েছে মায়ানগরীর বাড়িতে শরীর খারাপ নিয়েই পড়ে ছিলেন তিনি। দেখভালের কেউ ছিল না। কিন্তু তা সত্ত্বেও সন্তানদের যেতে দিতেন না রত্না। প্রসেনজিতের বাবার কথায়, ‘ও আমায় নিজের প্রতিপক্ষ ভাবতো। বলতো ‘বিশ্বজিতের নামে আমি চলি না’। এখন আসলে বুঝি বিয়ের প্রথম দিন থেকেই রত্নার সঙ্গে আমার মন বা মত কোনোটারই মিল হয়নি। ও ভীষণ ডমিনেটিং আর উগ্র মেজাজের ছিল’।

বিশ্বজিৎ বলেন, তাঁকে এও শুনতে হয়েছে যে সন্তানদের নাকি নিজের কোনও সম্পত্তি দেননি। তবে একথা ঠিক নয় বলে দাবি করেন অভিনেতা। বলেন, ‘জামির লেনের বাড়ি আমি রত্নার নামে লিখে দিই। আমার সব ছবির রাইটস ওর মায়ের নামে করে দিয়েছিলাম। ও যদি সব টাকা উড়িয়ে দেয় সেটা তো আমার দোষ নয়’। এমনকি প্রসেনজিতের মামার বাড়ির আর্থিক অবস্থাও ভালো ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, প্রথম বিয়ে ভাঙার পর ইরা দেবীর হাত ধরে নতুন জীবন শুরু করেন বিশ্বজিৎ। তাঁদের এক মেয়ে রয়েছে, নাম সম্ভাবী চট্টোপাধ্যায়। এদিকে বহু বছর বাবার সঙ্গে যোগাযোগ না থাকলেও বুম্বাদার (Prosenjit Chatterjee) দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকে সেই সম্পর্ক অনেকটা সহজ হতে শুরু করে। এরপর অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়ের সুবাদে বাবা-ছেলের দূরত্ব আরও কমেছে বলে জানা যায়।





Made in India