বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বঙ্গ রাজনীতিতে অত্যন্ত পরিচিত নাম রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। একসময় ডোমজুড়ের বিধায়ক হিসেবে ব্যাপক দাপট ছিল তাঁর। দলে থেকেও ব্যাপক বঞ্চনার অভিযোগ তুলে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ভোট মিটতেই ঘর ওয়াপসি হয় তাঁদের। আর এবার এহেন রাজীব দেখা করলেন তৃণমূলের প্রবীণ সংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Kalyan Banerjee) সাথে।
বরফ গলল রাজীব-কল্যাণ (Kalyan Banerjee) সম্পর্কের?
জানা যাচ্ছে, আজ সকালেই তিনি কল্যাণের বাড়িতে গিয়েছিলেন। কল্যাণের (Kalyan Banerjee) দাবী রাজীব নাকি তাঁকে বলেছেন, ‘ভুল হয়েছে ক্ষমা করে দাও’। অন্যদিকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় গোটা বিষয়টিকে সৌজন্য সাক্ষাৎ বলে দাবি করেছেন। প্রসঙ্গত একুশের নির্বাচনের আগে রাজীবের (Rajib Banerjee) সাথে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছিলেন প্রবীর ঘোষাল সহ আরও কয়েকজন। যদিও ভোট মিটতেই মোহভঙ্গ হয় তাঁদের। বিজেপি প্রার্থী হয়ে পরাজিত হওয়ার পর আবার ফিরে আসেন তৃণমূলে।
রাজীব তৃণমূলে ফিরতেই তাঁর বিরুদ্ধে ডোমজুড়ে পোস্টার পড়তে শুরু করেছিল। অন্যান্য অনেকের মতোই রাজীবের দলে ফেরা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন শ্রীরামপুর সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)। এমন পরিস্থিতি তৈরী হয় যে নিজের জায়গাতেই কোণঠাসা হয়ে পড়েন রাজীব। এরপর দল তাঁকে দায়িত্ব দিয়ে ত্রিপুরায় পাঠিয়ে দেয়। তারপর ২৪-এর লোকসভা ভোটের প্রচারেও এক মঞ্চে দেখা যায়নি কল্যাণ ও রাজীবকে। বলা ভালো রাজীবের সঙ্গে ক্রমশ প্রকট হতে শুরু করেছিল কল্যাণের দূরত্ব।
আরও পড়ুন: ফুলে ফেঁপে উঠল নবান্নের ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’! অবশেষে বরাদ্দের ৬৯৯ কোটি টাকা দিল কেন্দ্রীয় সরকার
প্রসঙ্গত, শ্রীরামপুর লোকসভার মধ্যেই রয়েছে ডোমজুড় বিধানসভা কেন্দ্র। সেখানে বিধায়ক কল্যাণ ঘোষের অনুগামীরাও রাজীবের বিরুদ্ধে সরব হন। দলের খারাপ সময়ে কর্মীদের পাশে ছিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মনে করা হচ্ছে অবশেষে বরফ গলল রাজীব-কল্যাণের সম্পর্কের।
জানা যাচ্ছে, রবিবার প্রবীর ঘোষালের সঙ্গেই শ্রীরামপুর গঙ্গা দর্শনে গিয়েছিলেন রাজীব। সেখান দিয়েই সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। জানা যাচ্ছে, এদিন বেশ কিছুক্ষণ কথা হয়েছে তাঁদের মধ্যে। পরে বাইরে বেরিয়ে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান,’আমি দল পরিবর্তন করেছিলাম বলে দাদার অভিমান হয়েছিল’। তারপর থেকে নাকি তাঁদের মধ্যে একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। রাজীবের কথায়, ‘আজকে যখন শ্রীরামপুরে এসেছিলাম তখন মনে হল দাদার সঙ্গে গিয়ে একটু সৌজন্য সাক্ষাৎ করি। দাদা ভাইয়ের সম্পর্কের মধ্যে ভালোবাসাও থাকবে রাগও থাকবে,অভিমানও থাকবে অভিযোগও থাকবে। আজকে দেখা হয়ে খুব ভালো লাগলো। দাদা জড়িয়ে ধরে আলিঙ্গন করলেন। আমরা একই দল করি। আশা করি আগামী দিনে দাদা ভাইয়ের সম্পর্ক অটুট থাকবে।

অন্যদিকে এই সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘রাজীব দলে জয়েন করেছে অনেকদিন আগেই। দিদি ওকে কিছু কিছু দায়িত্ব দিয়েছে। রাজীব আজ আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। বলল দাদা ভুল টুল হয়েছে। ক্ষমা টমা করো। ২০২৬ এ নির্বাচন আসছে সবাইকে নিয়ে তো চলতে হবে সবাইকে নিয়েই কাজ করতে হবে। দল কাকে কী দায়িত্ব দেবে সেটা পরের ব্যাপার। আমার সঙ্গে ওর ব্যক্তিগত কোন সমস্যা ছিল না। একটা কষ্ট ছিল তুমি তৃণমূল থেকে কেন চলে গেলে। দল থেকে তো কোন তোমার প্রতি অবিচার হয়নি। এটা আমার একটা অভিমানের জায়গা ছিল।’





Made in India