বাংলাহান্ট ডেস্ক : সম্প্রতি তৃণমূলের সাংবাদিক সম্মেলনে, নন্দীগ্রাম বিধানসভায় শুভেন্দু অধিকারীর জয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দুই প্রাক্তন বিজেপি নেতা। বিধানসভা নির্বাচনের সময় দুই নেতাই বিজেপিতে থাকলেও পরবর্তীতে যোগ দেন তৃনমূলে। সাংবাদিক সম্মেলন থেকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জয়প্রকাশ মজুমদার দাবি করেন যে নন্দীগ্রামে শুভেন্দু জেতেনইনি। কারচুপি করে গদি দখল করেছেন। এবার এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন খোদ রাজ্যের বিরোধী দলনেতাই। ফেসবুকে একটি পোস্ট ও তিনটি বাঁদরের ছবি পোস্ট করে তৃনমুলকে বেশ এক হাত নিলেন তিনি।
শনিবার ক্যামাক স্ট্রিটে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় থেকে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জয়প্রকাশ মজুমদার। সম্প্রতি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন দুই নেতাই। এদিন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন যে ভোট গণনার দিন বিকেলে শুভেন্দু খোদ তাঁকে ফোন করে জানান যে নন্দীগ্রামে হেরে গিয়েছেন তিনি। তারপর আবার কিভাবে সেখানে জিতে গেলেন শুভেন্দু তা জানা নেই বলেই দাবি করেছেন রাজীব।
অন্যদিকে এই অভিযোগে গলা মিলিয়েছেন সদ্য ঘাসফুল শিবিরে যোগ দেওয়া জয়প্রকাশ মজুমদারও। তিনি বলেন, ‘২মে বিকেলে বিজেপি মুখপাত্র হিসেবে শুনশান বিজেপি কার্যালয় থেকে আমিই সাংবাদিক সম্মেলন করি। সেখানে আমি জানাই মাননীয়া নন্দীগ্রামে জিতে গিয়েছেন। আমাদের প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী পরাজিত হয়েছেন। কিন্তু পরে জানতে পারি অন্য ফল হয়েছে। আমি যখন শুভেন্দুকে বলি তুমি তো হেরে গিয়েছিলে, আবার জিতলে কী ভাবে? জবাবে শুভেন্দু রহস্যময় হাসি হেসে বলেন অনেক কিছু করতে হয়েছে।’
গতকালের তোলামুল দলের সাংবাদিক “প্রহসন” থুড়ি সম্মেলন দেখে সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত এর “উত্তম ও অধম” কবিতাটি মনে পড়ে গেলো।
সাংবাদিক সম্মেলনের দৃশ্য ও কবিতাটির এক ঝলক আপনাদের জ্ঞাতার্থে: pic.twitter.com/nZsI4EN06P— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) March 13, 2022
এবার এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন শুভেন্দু। এদিন ফেসবুকে গান্ধিজীর ৩ বাঁদর এবং সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত এই ‘উত্তম ও অধম’ কবিতার একটি ছবি পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘গতকালের তোলামূল দলের সাংবাদিক ‘প্রহসন’ থুড়ি সম্মেলন দেখে সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ‘উত্তম ও অধম’ কবিতাটির কথা মনে পড়ে গেল।’ বাঁদর তিনটির ছবি প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা লেখেন, ‘সাংবাদিক সম্মেলনের দৃশ্য ও কবিতাটির এক ঝলক আপনার জ্ঞাতার্থে। ‘
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২ মে বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার দিন সকাল থেকে কোনও আপডেটই পাওয়া যাচ্ছিল না নন্দীগ্রামের। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল প্রায় সমস্ত যোগাযোগই। সন্ধ্যে নাগাদ খবর আসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিতে গিয়েছেন সেখানে। কিন্তু তার মাত্র কিছুক্ষণের মধ্যেই জানানো হয়, মমতা নয় শুভেন্দুর দখলেই নন্দীগ্রাম। ১৯৫৬ ভোটে তৃণমূল নেত্রীকে হারিয়ে নন্দীগ্রামের গদিতে বসেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী।
আমোদ পেলাম।
এতদিন বলতে উত্তর দিই না।
আজ বুঝলাম ওষুধ কাজ করছে।
গা জ্বলছে।
জবাবি টুইট করতে হচ্ছে।
জমবে। https://t.co/tJUa5WK3aK— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) March 13, 2022
যদিও এই হারকে কোনও ভাবেই মেনে নেননি মমতা। একাধিক বার তিনি অভিযোগ তুলেছেন নন্দীগ্রামে কারচুপি এবং ষড়যন্ত্রের। তাঁকে খুনের চেষ্টার অভিযোগও আনেন তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে। মমতার দাবি, ওই কেন্দ্রে তাঁকে হারানোর জন্য ‘অ্যাডজাস্টমেন্ট’ করা হয়েছিল। কিন্তু কে করেছিলেন এই বোঝাপড়া তা নিয়ে অবশ্য কখনওই মুখ খোলেননি মুখ্যমন্ত্রী। এই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা চলছে হাইকোর্টে। কিন্তু দশ মাস পেরোলেও এখনও ঝুলে রয়েছে সে মামলা। ফলে কবে উদঘাটিত হবে এই রহস্যের পর্দা তার উত্তর সত্যিই জানা কেউ কারওই।





Made in India