বাংলা হান্ট ডেস্কঃ স্কুল সার্ভিস কমিশন (School Service Commission) থেকে প্রাথমিক টেট (Primary Tet), কয়লা থেকে গরু পাচার; একের পর এক দুর্নীতি মামলা সামনে উঠে আসায় বর্তমানে উত্তপ্ত বঙ্গ রাজনীতি। এ সকল মামলায় ইতিমধ্যেই একাধিক নেতা মন্ত্রীদের জড়িত থাকায় ক্রমশ ব্যাকফুটে চলে গিয়েছে শাসক দল। সম্প্রতি, পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারের পর সেই চাপ আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানেএ সকল ইস্যুগুলিকে হাতিয়ার করে তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) বিরুদ্ধে আক্রমণের ঝাঁঝ ক্রমশ বাড়িয়ে চলেছে বিরোধী দলগুলি।
পার্থ এবং অনুব্রতর পর ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) জেলে যেতে চলেছেন বলে এবার মন্তব্য প্রকাশ করলেন বিজেপি (BJP) রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। তাঁর এই মন্তব্যের পর স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়ে গিয়েছে। যদিও এ বক্তব্যের পাল্টা দিয়েছে ঘাসফুল শিবির।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে নিয়োগ দুর্নীতি থেকে শুরু করে কয়লা এবং গরু পাচার মামলায় অস্বস্তিতে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রথমে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং বর্তমানে অনুব্রত মণ্ডল জেল হেফাজতে রয়েছেন। যদিও বিরোধীরা এ সকল দুর্নীতি মামলায় ‘পিসি-ভাইপো’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেকের যোগ রয়েছে বলে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে। গতকাল আক্রমণের সেই ঝাঁঝ আরো বাড়িয়ে সুকান্ত মজুমদার দাবি করেন, “পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অনুব্রতর পর এবার তৃণমূল কংগ্রেস মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জেলে যাবে।” যদিও অপরদিকে তৃণমূল পাল্টা কটাক্ষ করে বলেছে, “কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা কি পদক্ষেপ নেবে, তা বিজেপি যেন স্থির করে দিচ্ছে।”
গতকাল মুর্শিদাবাদ দক্ষিণে দলীয় একটি কর্মসূচিতে যোগ দেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। উল্লেখ্য, বিগত কয়েকদিন ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘চোর ধরো জেল ভরো’ কর্মসূচির আয়োজন করে চলেছে বিরোধী দলগুলি। গতকাল সেই সভায় যোগ দিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসেন বিজেপি নেতা। তিনি বলেন, “তৃণমূলের চোরের সংখ্যা অনেক। সেই তালিকায় যারা যারা আছে, কাউকে ছাড়া হবে না। পার্থ ও অনুব্রত গিয়েছে, এবার ববি যাবে।”
একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কটাক্ষ ছুড়ে দেওয়ার পাশাপাশি দলীয় কর্মীদেরও গতকাল চাঙ্গা করেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, “উনি মুখ্যমন্ত্রীর পদে থেকেও দলের কে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, তা জানতে পারছেন না। আমি দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলি, পঞ্চায়েত ভোটের সময় আপনার লাঠি হাতে বেরোবেন এবং বুথ সামলানোর দায়িত্ব আপনাদের। প্রতিটি মণ্ডল অফিসের সামনে ‘গোপনে তোলাবাজি রোগ বন্ধ কেন্দ্র’ নামক একটি ব্যানার ঝুলিয়ে দিন। শাসকদলের কে কত টাকা নিচ্ছে, তা আপনারা তালিকা করে রাখুন। কেউ ছাড় পাবে না।”
যদিও বিজেপি নেতার এহেন বক্তব্যের বিরুদ্ধে পাল্টা কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল নেতা তাপস রায় বলেন, “কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা যে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে সক্ষম, তা আমাদের সকলের জানা। কাকে ধরতে হবে কিংবা কাকে তলব করবে, সেটা একমাত্র তারাই স্থির করবে। কিন্তু বর্তমানে যা পরিস্থিতি, তাতে মনে হচ্ছে বিজেপির নির্দেশেই ওরা সব কাজ করে চলেছে।”

এদিন এ প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিমের কোনরকম প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে অতীতে দুর্নীতি প্রসঙ্গে কলকাতার মেয়র সাফ জানান, “যদি আমার বিরুদ্ধে কোনরকম দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারেন, তবে সিবিআই এবং ইডির শাস্তির আগেই আমি নিজেকে মৃত্যুদণ্ড দেব।” স্বাভাবিকভাবেই শাসক এবং বিরোধীদের দাবি ও পাল্টা দাবি মাঝে বর্তমানে সরগরম রয়েছে পরিস্থিতি আর গতকাল সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য সেই পরিস্থিতি যে আরও উত্তপ্ত করে তুলবে, তা বলাবাহুল্য।
 
			 





 Made in India
 Made in India