বাংলাহান্ট ডেস্ক: ভারত (India) ও পাকিস্তানের (Pakistan) মধ্যে টানাপোড়েন এখনও অব্যাহত রয়েছে। তবে, পাকিস্তানের প্রাক্তন সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া ভারতের সাথে বন্ধুত্বের চেষ্টা করলেও সেদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তাঁর প্রচেষ্টাকে সম্পূর্ণভাবে ভেস্তে দেন। যদিও, এখন পাকিস্তানি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দেশটিতে নির্বাচনের পর পাকিস্তান তাদের ভারত নীতি পরিবর্তন করতে বাধ্য হতে পারে। যেটি প্রায় ৭৬ বছর ধরে চলে আসছে। শুধু তাই নয়, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহী পাকিস্তানকে এই কাজে বাধ্য করতে পারে বলেও জানা গিয়েছে।
ইতিমধ্যেই পাকিস্তানি সংবাদপত্র এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের সিনিয়র সাংবাদিক কামরান ইউসুফ জানিয়েছেন, পাকিস্তান এখন এমন ইঙ্গিত দিয়েছে যে, তারা ভারতের প্রতি তার ৭৬ বছরের পুরোনো অনড় নীতি ত্যাগ করতে পারে। তিনি বলেন, আরবের দেশগুলি পাকিস্তানকে এই পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য করবে। পাশাপাশি, ওই দেশগুলি ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের জন্য কয়েক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছে। কামরান আরও জানিয়েছেন যে, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, উভয়ের সাথেই ভারতের বন্ধুত্ব আরও শক্তিশালী হয়েছে। আগে এই দুই দেশই ভারতের বিরুদ্ধে সব ফ্রন্টে পাকিস্তানকে সাহায্য করত। কিন্তু এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে।

বাধ্য হতে পারে পাকিস্তান: এই প্রসঙ্গে সূত্রকে উদ্ধৃত করে কামরান বলেন, বর্তমানে পাকিস্তান দরিদ্র হয়ে পড়েছে এবং দেশের বিদেশি বন্ধুরা দেশটিকে ঋণ দেওয়ার বিষয়টিতে এড়িয়ে গেছে। পাকিস্তান কয়েক বছর ধরে সংযুক্ত আরব আমিরশাহী ও সৌদি আরব থেকে ঋণ নিলেও এখন তা বন্ধ হয়ে গেছে। পাশাপাশি, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহী উভয় দেশই স্পষ্ট বলেছে যে তারা এখন পাকিস্তানের সরকারি সম্পত্তি কিনবে এবং বিনিময়ে অর্থ দেবে। ইতিমধ্যেই সংযুক্ত আরব আমিরশাহী ২৫ বছরের জন্য করাচি বন্দরে অংশীদারিত্ব কিনেছে এবং সৌদি আরব গোয়াদরে একটি শোধনাগার স্থাপনের লক্ষ্যে ৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে চলেছে বলেও জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: বুর্জ খলিফার গায়ে এবার আর দেখা গেল না পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা, চটে লাল ইসলামাবাদ
একই সঙ্গে পাকিস্তানের রেকো ডিক খনির শেয়ার কেনার পরিকল্পনা রয়েছে সৌদি আরবের। এই পুরো চুক্তি ডিসেম্বরের মধ্যে করতে হবে, যা তত্ত্বাবধায়ক সরকার করবে। কামরান বলেন, এই কয়েক বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের ফলে পাকিস্তানের বিদেশনীতিতে এই দুই দেশের প্রভাব অনেকটাই বাড়বে। এদিকে, বিপুলসংখ্যক ভারতীয় ইতিমধ্যেই সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর কোম্পানিতে কাজ করেন এবং এখন UAE-র চাপে তাঁদের পাকিস্তানে ভিসা দিতে হবে। উল্লেখ্য যে, এর আগে নিরাপত্তার কারণে এই পরিস্থিতিতে ভারতের কোনো নাগরিককে ভিসা দেওয়া থেকে বিরত ছিল পাকিস্তান। কামরান আরও জানান, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর সাথে ভারতের বন্ধুত্ব এতটাই বেড়েছে যে, পাকিস্তানের বহু চেষ্টার পরেও ওআইসির বৈঠক ডাকা হয়নি।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানকে সাহায্য করা চিন এবার নিজেই খেল বড় ধাক্কা! ইতিহাসের সবথেকে বড় বিপদের সম্মুখীন ড্রাগন
বাজওয়ারের ভারত প্ল্যান অনুমোদন পেতে পারে: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী কাশ্মীরে বিনিয়োগ করছে। কামরান জানান, বাজওয়ারের আমলে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য শুরু করার পরিকল্পনা ছিল কিন্তু ইমরান খানের কারণে তা সম্ভব হয়নি। সংযুক্ত আরব আমিরশাহী ও সৌদি আরব চায় পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হোক। তাঁর মতে, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী ও সৌদি আরবের বিনিয়োগ যত বাড়বে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কও তত বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি, পাকিস্তানের বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল মুনিরও এমন কোনো পদক্ষেপ নেননি যা ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করতে পারে। ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের ক্রিকেট দলেরও ভারতে আসার ক্ষেত্রে অনুমোদন দিয়েছে সেনাবাহিনী। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে জেনারেল বাজওয়ারের পরিকল্পনা এখন বাস্তবায়িত হতে পারে।





Made in India