বাংলা হান্ট ডেস্ক: গত বুধবার শ্রীনগরের টেগোর হল “লাল সেলাম” ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, কাশ্মীরে (Jammu and Kashmir) ৩৭০ ধারা পুনরুদ্ধার এবং পাকিস্তানের সাথে আলোচনা শুরু করার আহ্বান জানিয়ে একদিনের সম্মেলন আয়োজন করে সিপিএম। এমতাবস্থায়, ওই সম্মেলনটি কাশ্মীর উপত্যকায় একটি বিরল রাজনৈতিক ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সেখানে বেশিরভাগ আঞ্চলিক দলও জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা পুনরুদ্ধারের বিষয়টি উত্থাপনের পরিবর্তে রাজ্যের মর্যাদা পুনরুদ্ধারের দাবিতে আলোচনা শুরু করেছে।
কাশ্মীরে (Jammu and Kashmir) কী দাবি করল সিপিএম:
উল্লেখ্য যে, “জম্মু ও কাশ্মীরের (Jammu and Kashmir) জনগণের বৈধ সাংবিধানিক অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য সম্মেলন” শীর্ষক অনুষ্ঠানে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে গিয়ে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক এম আলেকজান্ডার বেবি বলেন, “জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা প্রদানকারী ৩৭০ ধারা বাতিল করা বিশ্বাসঘাতকতার মতো।” তিনি আরও বলেন, “ভারতের সংবিধানে ৩৭০ ধারা যুক্ত করার আগে, এটি নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আলোচনা করা হয়েছিল এবং তাতে সম্মতি জানানো হয়েছিল।”
এদিকে, তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সেই দাবিরও তীব্র সমালোচনা করেন, যেখানে শাহ বলেন ৩৭০ ধারা বাতিলের ফলে কাশ্মীরে শান্তি ও উন্নয়ন এসেছে। আলেকজান্ডার বেবি, দলের বেশ কয়েকজন সাংসদ এবং অন্যান্য নেতাদের সাথে, অপারেশন সিঁদুরের সময়ে পাকিস্তানি গোলাবর্ষণের ফলে সৃষ্ট ধ্বংসযজ্ঞ পর্যালোচনা করতে উরির সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিও পরিদর্শন করেন।

তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের জন্য যে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে তা অপ্রতুল। বেবির মতে “সরকার ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর এবং আবাসিক পরিকাঠামোর জন্য মাত্র ১.৩ লক্ষ টাকা দিয়েছে। যেটি অত্যন্ত কম। তিনি বলেন, তাঁর দলের সাংসদরা লোকসভায় এই বিষয়টি উত্থাপন করবেন। এদিকে, তিনি পহেলগাঁও-তে জঙ্গি হামলায় নিহত আদিল শাহের পরিবারের সদস্যদের সাথেও দেখা করেন। বেবি বলেন, কাশ্মীরিরা (Jammu and Kashmir) বছরের পর বছর ধরে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে। কিন্তু বর্তমান প্রশাসন রাজ্যের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রান্তিক করে তুলেছে।
আরও পড়ুন: মোদী জমানায় মাত্র ১১ বছরেই ইতিহাস তৈরি ভারতের! উন্নতির শিখরে পৌঁছল দেশ, সামনে বিরাট পরিসংখ্যান
তিনি আরও জানান, নিরাপত্তা পর্যালোচনা বৈঠকের সময়, কেন্দ্রের মনোনীত এলজি, বৈঠকের সভাপতিত্ব করেছিলেন। যেখানে নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। বেবি বলেন, “এটি কেবল সন্ত্রাসবাদীদের উৎসাহিত করে।” বেবি জোর দিয়ে জানান যে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে, কিন্তু যুদ্ধ কোনও সমাধান নয়। তাঁর মতে, “সামরিক বিকল্প সীমিত। ৭ মে, কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। তবে আমাদের সেখানেই থামতে হবে এবং আলোচনা শুরু করতে হবে।” এমতাবস্থায় তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার আহ্বান জানান। এদিকে, তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেন যে এক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কোনও ভূমিকা থাকা উচিত নয়।
আরও পড়ুন: চরম সঙ্কটে “কাঙাল” পাকিস্তান! প্রত্যেক পাকিস্তানির মাথায় রয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকার ঋণের বোঝা
এদিকে, কাশ্মীরের (Jammu and Kashmir) সিপিএম নেতা এম ওয়াই তারিগামিও জম্মু ও কাশ্মীরকে দ্বিখণ্ডিত করে রাজ্যের মর্যাদা এবং বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেছেন। তিনি জানান, “দেশের মধ্যে এটিই একমাত্র অঞ্চল যেখানে (রাজ্য থেকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে) এমন পরিবর্তন ঘটেছে। অন্যত্র, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে পূর্ণ রাজ্যে উন্নীত করা হয়েছে”।
দেখুন গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও: